
যোগ্য হলে যে কোনও বয়সেই সাক্ষ্য দেওয়া যাবে, শিশুর ক্ষেত্রে কোনও বয়ঃসীমা নেই: সুপ্রিম কোর্ট
সাক্ষীর বয়সের (Witness Age) কোনও ন্যূনতম সীমা থাকা উচিত নয়। যোগ্য হলে যে কোনও বয়সেই (Age Limit) সাক্ষ্য দেওয়া যাবে এবং তা গ্রহণ করতে হবে। শিশুদের ক্ষেত্রে কোনও বয়ঃসীমা নেই। এক খুনের মামলায় এমনটাই পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চের।
স্ত্রীকে খুনের অভিযোগ উঠেছিল এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টে সেই মামলা উঠলে বেকসুর খালাস পান অভিযুক্ত। কারণ দম্পতির সাত বছরের কন্যা সাক্ষ্য দিলেও তার মান্যতা দেয়নি আদালত। এরপর মামলা গড়ায় সুপ্রিম কোর্টে। সেই মামলারই শুনানিতে শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, বয়সের কারণে কারও সাক্ষ্য বাতিল করা যাবে না। অন্য যে কোনও বয়সের সাক্ষীর মতো শিশুর সাক্ষ্যও সমান গুরুত্বপূর্ণ। শুধু দেখতে হবে, সে সাক্ষ্য দেওয়ার যোগ্য কিনা। তাহলেই সে সাক্ষ্য গ্রহণ করতে হবে।
সুপ্রিম কোর্ট এও জানিয়েছে, ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী সাক্ষীর কত বয়স হবে তার কোনও মাপকাঠি নির্ধারণ করে দেওয়া হয়নি। তাই কোনও মামলার ক্ষেত্রে সাক্ষী শিশু হলেও তার সাক্ষ্য শুনতে হবে এবং তা গ্রহণ করতে হবে। কোনও ভাবেই বয়সের কারণে তা বাতিল করা যাবে না। এই পর্যবেক্ষণের পর মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টের রায়কে খারিজ করে দেয় সর্বোচ্চ আদালত।
অনেক মামলার ক্ষেত্রেই দেখা যায় শিশুদের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয় না। যুক্তি দেওয়া হয়, তাঁরা প্রভাবিত হয়ে থাকতে পারে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট বলছে, আদৌ শিশু প্রভাবিত হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখেই তার সাক্ষ্য গ্রহণ করতে হবে। আদালতকেও বিষয়টি নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে। যে মামলার প্রেক্ষিতে এই পর্যবেক্ষণ সেই ঘটনায় খুনের সময়ে সাত বছরের মেয়েটি বাড়িতেই ছিল এবং সে তার মাকে খুন হতে দেখেছে। শিশুর সাক্ষীর ভিত্তিতেই সুপ্রিম কোর্ট অভিযুক্ত ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবনের সাজা শুনিয়েছে।
শীর্ষ আদালত বলছে, সব রকমভাবে খতিয়ে দেখে যদি প্রমাণিত হয় যে শিশু প্রভাবিত হয়নি, তাহলে তার সাক্ষ্য গ্রহণ করে মামলায় পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে হবে। এক্ষেত্রে শিশুর বয়ানই অভিযুক্তকে দোষী অথবা নির্দোষ প্রমাণ করতে পারে।